সরকারি ও বেসরকারি অর্থব্যবস্থার মধ্যে পার্থক্য

অর্থশাস্ত্রের যেখানে সরকারি আয় ব্যয়ের হিসাব নিকাশ ইত্যাদি আলোচনা করা হয় সেটি আসলে সরকারি অর্থ ব্যবস্থা বলা হয়ে থাকে। অর্থাৎ সরকারি অর্থব্যবস্থা বলতে সরকারের আয় ব্যয় এবং একটির সঙ্গে আরেকটির সমন্বয় সম্পর্কে আলোচনা করে। আর অপরদিকে ব্যক্তির আয় ব্যয়ের পর্যালোচনা তথা আয় ব্যয় সংক্রান্ত আলোচনা হচ্ছে ব্যক্তিগত বা প্রাইভেট অর্থাৎ বেসরকারি অর্থ ব্যবস্থা। এই বিষয়ে প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ ডাস্টন বলেন সরকারি অর্থ ব্যবস্থা সরকারের এবং একটি সঙ্গে অন্যটির সমন্বয় সম্বন্ধে আলোচনা করে। ব্যক্তিগত অর্থের অর্থাৎ ব্যক্তির আয় যদি কম হয় সে ব্যক্তি অবশ্যই কম খরচের চেষ্টা করে থাকবেন অর্থাৎ আয় বুঝে ব্যয় করা। আবার অন্যদিকে ব্যক্তির আয় যদি বেশি হয় অবশ্যই সে ব্যক্তি বেশি ব্যয় করবেন।

তাই বলা যায় যে সরকারি অর্থ বলতে জনগণের দ্বারা উৎপাদিত আয় অর্থাৎ বিভিন্ন ধরনের ট্যাক্স কর রাজস্ব ইত্যাদি থেকে আদায়কৃত অর্থ সরকারি অর্থ বলে বিবেচনা করা হয়। অর্থশাস্ত্রের যে শাখায় সরকারি অর্থের আয় ব্যয় বার্ষিক ঋণ সংক্রান্ত নীতি ও পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করা হলে সেই স্বাস্থ্যকে সরকারি অর্থ ব্যবস্থা বলা হয়ে থাকে। সরকারি অর্থের আয় ব্যয়ের হিসাব নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে অর্থমন্ত্রী যাবতীয় অর্থের হিসাব নিকাশ এর হিসাব নিকাশ পরিকল্পনা মন্ত্রী এবং অর্থমন্ত্রী করে থাকেন। অন্যদিকে বেসরকারি অর্থ বলতে জনগণের ব্যক্তিগত অর্থকেই বুঝিয়ে থাকে। অর্থাৎ প্রতিটি জনগণের অবশ্যই কিছু না কিছু অর্থ রয়েছে এই অর্থ গুলি বেসরকারি অর্থ অর্থাৎ ব্যক্তিগত অর্থ নামে পরিচিত। ব্যক্তির ব্যক্তিগত আয় ব্যয় এর পর্যালোচনা তথা আয় ব্যয় সংক্রান্ত আলোচনাই হলো ব্যক্তিগত অর্থ ব্যবস্থাপনা। একজন ব্যক্তির তার আয় ব্যয় অবশ্যই হিসাব করে চলবেন কারণ যদি তার আয়কম হয় ব্যয় বেশি হয় তাহলে সেদিন গোস্ত হয়ে বেশিদিন চলতে পারবে না।

তাই ব্যক্তিকে অবশ্যই তার চাকুরীর বেতনের উপর নির্ভর করে ব্যয় করতে হয় অর্থাৎ বেতন যেমন তার ব্যয় করার পরিধিও সে ধরনের হয়ে থাকে চাইলেও তখন বেশি ব্যয় করতে পারে না কারণ এর চেয়ে ব্যয় হলে দেয় বেশি হলে অবশ্যই তার হাতে অর্থ থাকবে না আর তাই সে খরচ করতে পারবে না। ব্যক্তি নিজেই তার ব্যক্তিগত বাজেট করে থাকে। ব্যক্তিগত বাজেট অবশ্যই উদ্বৃত্ত হওয়া বাঞ্ছনীয় যদি তা না হয় তাহলে তা ব্যক্তির জন্য অকল্যাণকর হতে পারে। ব্যক্তি ব্যক্তিগতভাবে বিভিন্ন জায়গায় থেকেই ঋণ গ্রহণ করতে পারে সেটি হল আত্মীয়-স্বজন বন্ধু-বান্ধব এছাড়াও বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো থেকেও ব্যক্তি ব্যক্তিগত ঋণ নিতে পারে। তবে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো থেকে ঋণ নিতে হলে ব্যক্তিকে অবশ্যই কিছু শর্ত পূরণ করতে হয় স্বার্থ পূরণ করেই বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণ করা যায়।

তাই বলা যায় ব্যক্তিগত ঋণ একেবারেই ব্যক্তির নিজের। আবার ব্যক্তিগত অর্থ সেক্ষেত্রে তাই হয়ে থাকে ব্যক্তির একেবারে নিজের অর্থই ব্যক্তিগত অর্থ বা বেসরকারি অর্থ। সকল ব্যক্তির ব্যক্তিগত অর্থ বলেই বেসরকারি অর্থ বলে জানা যায়। অর্থাৎ সরকারি অর্থ সরকারি আয় ব্যয় বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রহণ করা ঋণ এগুলি সরকারি অর্থ সরকারি অর্থের প্রধান অংশ জনগণের থেকে পাওয়া ট্যাক্স ভ্যাট রেমিটেন্স রাজস্ব ইত্যাদি থেকে আসে। অর্থাৎ সরকারি অর্থ ব্যবস্থার অপরপিট হল ব্যক্তিগত অর্থ বা বেসরকারি অর্থ ব্যবস্থা। ব্যক্তির অর্থ ব্যক্তি ইচ্ছা করলে অবশ্যই গোপন রাখতে পারে, তবে সরকার যদি ইচ্ছা করে তবে তা উন্মুক্ত করে দিতে পারে।

সরকারি এবং বেসরকারি অর্থ ব্যবস্থার মধ্যে পার্থক্য গুলি এখন আমরা দেখে নিতে পারি তা হল- ব্যক্তি তার আয় বুঝে ব্যয় করে অর্থাৎ ব্যক্তির আয় বেশি হলে ব্যয় বেশি হয় এবং আয় কম হলে ব্যয় কম হয় অপরদিকে সরকারি অর্থ ব্যবস্থায় তার উল্টোটি হয় অর্থাৎ সরকার ব্যয় বুঝে আয় করে কারণ সরকার আগে বাজেট ঘোষণা করে এবং সেখানে কি ধরনের ব্যয় হবে তারপর নির্ধারণ করে কোথায় থেকে কত টাকা আনতে হবে অর্থাৎ সংগ্রহ করার ক্ষেত্রে তখন টার্গেট পূরণে কাজ করে থাকে সরকার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *