সহজ কথায় পেশা হলো মানুষ যে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে তাকে তার পেশা বলা হয়ে থাকে। অপরদিকে বৃত্তি হচ্ছে মেধার বহিঃপ্রকাশ। আবার পেশাকে আমরা ক্ষমতার বহিঃপ্রকাশ বলেও থাকি। কারণ যে ক্ষমতার দ্বারা মানুষ জীবিকা নির্বাহ করে অর্থাৎ যে ধরনের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে তাই তার ক্ষমতা। ক্ষমতা না থাকলে অবশ্যই সে ওই কাজ করতে পারতো না এবং তার জীবিকা নির্বাহ হতো না। এই অর্থে তাকে ওই কাজ করার ক্ষমতা বলে অভিহিত করা হয়। আর ক্ষমতা বলে যেসব কাজ করে সেটি হচ্ছে তার পেশা। তবে আভিধানিক অর্থে দুটিই কাজ করা বোঝায়।
কোন ব্যক্তি যে কাজ করতে স্বাচ্ছন্দ বোধ করে এবং নিয়মিত সেটা করেই সে তার জীবিকা নির্বাহ করে তাই হচ্ছে পেশা। আর বৃত্তি বলতে বোঝায় যে কাজ করে সে জীবিকা নির্বাহ করে তাকে বোঝায়। পেশাতে কখনো কখনো আয় নাও হতে পারে তারপরেও সে সেই কাজ করে চলে এটাই তার পেশা। বৃত্তি বলতে বুৃঝায় যে কাজ করে সে জীবিকা নির্বাহ করে থাকে তাকেই বুঝায়। মানুষ পেশা অর্জন করে আর্থিক সংকট দূর করার জন্য এবং ক্ষমতার বহিঃপ্রকাশের জন্য। আর বৃত্তি অর্জন করে সম্মান অর্জন ও মেধার বহিঃপ্রকাশের জন্য। আবার অন্য দিক থেকে বললে বলা যায় যে পেশা এবং বৃত্তির মধ্যে অন্যতম সম্পর্ক হল তারা বা দুটি কাজই উভয় কাজই সেবা প্রদান করা। পেশাজীবী মানুষরা তাদের পেশা যতই অর্থ ইনকাম করে থাকুক তারপরে তাদের কাজটি অবশ্যই সেবা প্রদান করার লক্ষ্যেই করে থাকেন।
অর্থাৎ একজন রিকশাচালক যখন ঝড়-বৃষ্টির রাত্রিতে রিক্সা চালায় তখন আসলে সেই দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় মানুষকে সেবা প্রদান করার লক্ষ্যেই বা উদ্ধার করার লক্ষ্যেই তিনি তার রিকশা চালিয়ে যান শুধুমাত্র অর্থ উপার্জন করার জন্য নয়। অন্য দিক থেকেও বললে বলা যায় যে একজন ডাক্তারবাবুকে যখন আমরা অনেক রাত্রি অথবা দুর্যোগপূর্ণ যেকোনো সময় ডাকলে অবশ্যই তিনি আসেন সেটি শুধু অর্থ উপার্জন করার জন্য নয় সেবা প্রদান করার জন্যই তিনি আসেন। তেমনিভাবে আবার বললে বলা চলে যে একজন মানুষের যে ধরনের মেধা বহিঃপ্রকাশ ঘটায় সে অবশ্যই শুধুমাত্র অর্থের জন্য নয় তার সেবা প্রদান করার লক্ষ্যেও তার মেধা কাজে লাগায়। অর্থাৎ যেকোনো ব্যক্তির মেধা থাকলে সেই মেধা অনুযায়ার কারণে বিভিন্ন মানুষ তাকে সেই কাজ করে দেবার জন্য ডাকে শুধুমাত্র অর্থের জন্য তিনিও সেই কাজ করেন না তার ভাললাগা তার মেধার বহিঃপ্রকাশ থেকে তিনি ওই ধরনের কাজ করে থাকেন।
তাই আমরা বলতে পারি বৃত্তি এবং পেশা দুই কাজই সেবামূলক কাজ। তাই বলা যায় যে মানুষ তার জীবনধারণের জন্য যেসব অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে তিনি জড়িত থাকেন তাকে বৃত্তি বলা হয়। অন্যদিকে বুদ্ধিবৃত্তিক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে যোগ্যতা অর্জনের নামই হচ্ছে পেশা। মূলত সব পেশাকে বৃত্তি বলা হলেও সব ব্যক্তি পেশা হয় না। পেশার জন্য নির্দিষ্ট কোন বিষয়ে অবশ্যই তাকে দক্ষতা অর্জন করতে হয় কিন্তু বৃত্তির জন্য উঁচু মানের কোন দক্ষতার প্রয়োজন হয় না। তাই বলা যায় পেশার স্থায়ী আর বৃদ্ধি কখনো কখনো অস্থায়ী হতে পারে। যেমন কখনো কখনো কোনো ছাত্র-ছাত্রী তাদের লেখাপড়ার খরচ নির্বাহ করার জন্য ছাত্রছাত্রী পড়ানোর কাজ শুরু করে কিন্তু এটি তার সারা জীবনের কাজ নয় এজন্য একে অস্থায়ীও বলা হয়ে থাকে। তাহলে আমরা আপনাদেরকে পেশা এবং বৃত্তি দুইটি সম্পর্কেই বিস্তারিতভাবে দেখানো হলো।
তাই আপনারা অবশ্যই পেশা এবং বৃত্তি এই দুইটি পার্থক্য অবশ্যই বুঝতে পারলেন। আমরা যদিও পেশা এবং বৃত্তিকে আলাদা আলাদা ভেবে থাকি তার পরেও আসলে পেশা এবং বৃত্তি দুইটি প্রধানত একই কাজ দুইটি সেবামূলক। তাই স্পেশ াল এবং বৃত্তি দুইটি আলাদা ভাবার কোন অবকাশ নেই।