ডিজেল ইঞ্জিন ও পেট্রোল ইঞ্জিনের মধ্যে পার্থক্য

আমরা জানি যে আমাদের দেশে শুধু নয় সারা পৃথিবীতে জ্বালানি হিসেবে জীবাশ্ম জ্বালানি বহু প্রাচীনকাল থেকেই ব্যবহৃত হয়ে আসছে। অর্থাৎ বহু প্রাচীনকালের উদ্ভিদ এবং প্রাণীর মৃতদেহর যে ধ্বংসাবশেষ মাটির নিচে পাওয়া যায় সেগুলোকে জীবাশ্ম জ্বালানি বলে। আর এই জীবাশ্ম জ্বালানি শত শত বছর আগে থেকে পৃথিবীর মানুষ জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করে থাকে। এই জ্বালানি গুলি আমাদের বিভিন্ন গাড়ির বা ইঞ্জিনের জ্বালানি হিসেবেও ব্যবহৃত হয়ে থাকে। বর্তমানে প্রাকৃতিক গ্যাস দলীয় ইঞ্জিন চালনার কাজে ব্যবহার হচ্ছে ব্যাপকভাবে। আমাদের দেশে গ্যাস ইঞ্জিন চালিত গাড়িগুলি ব্যাপকভাবে জনপ্রিয়তা পেয়েছে। কারণ এই গ্যাসের ইঞ্জিনগুলি থেকে কালো ধোয়া বের হয় না পরিবেশ সুন্দর থাকে এই কারণে।

এছাড়া আমাদের দেশে ব্যাপকভাবে প্রচলিত আছে ডিজেল চালিত ইঞ্জিন এবং পেট্রোল চালিত ইঞ্জিনগুলি। তাহলে এখন আমরা জেনে নিতে পারি ডিজেল এবং পেট্রোল সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্যগুলি। পেট্রোলিয়াম সাধারণত ৫০০০ ফুট বা তার চেয়েও গভীরে শিলাস্তরের মধ্যে পাওয়া যায়। পেট্রোলিয়ামের সাথে অনেক সময় প্রাকৃতিক গ্যাস থাকে যা পেট্রোলিয়ামের উপরিভাগে চাপ প্রয়োগ করে। তবে খুব খনন করা হলে এই প্রাকৃতিক গ্যাস পেট্রোলিয়াম কে ভূপৃষ্ঠের উপরিভাগে উঠে আসতে সাহায্য করে। আমরা পেট্রোলিয়াম খনি থেকে অপরিশোধিত তেল বা অসচ্ছ তেল সংগ্রহ করে থাকি। কখনো কখনো সালফারের কিছু কিছু যৌগ থাকার কারণে এই অপরিশোধিত তেল দুর্গন্ধযুক্ত হয়ে থাকে। এই অপরিশোধিত পেট্রোলিয়াম মূলত বিভিন্ন হাইড্রোকার্বনের মিশ্রণ এবং সরাসরি ব্যবহার উপযোগী হয় না। আর তাই এই অপরিশোধিত পেট্রোলিয়াম কে পরিশোধিত করার সময় বিভিন্ন তাপমাত্রা থেকে বিভিন্ন ধরনের উপাদান বা রাসায়নিক উপাদান পেয়ে থাকি।

এই উপাদানগুলির মধ্যে হলো পেট্রোলিয়াম গ্যাস গ্যাসোলিন ম্যাপথা কেরোসিন ডিজেল তেল লুব্রিকেটিং তেল জ্বালানি তেল বিটুমিন ইত্যাদি। তাহলে আমরা বুঝতে পারছি যে এই অপরিশোধিত তেল শোধন করার সময় বা বিভিন্ন অংশ আলাদা আলাদা হয়ে থাকে। আমরা যখন এই অপরিশতিতে তেল আংশিক পাতন পদ্ধতিতে স্ফুটনাঙ্ক এর উপর ভিত্তি করে পৃথক করা হয় তখন আংশিক পাতানো হলো এক ধরনের পাতন প্রক্রিয়া। এখানে বাষ্পকে ঠান্ডা করার জন্য লম্বা কলাম থাকে। এই কলামের বিভিন্ন অংশে বিভক্ত থাকার কারণে বিভিন্ন তাপমাত্রায় এই অংশগুলি থেকে যায় । এই কলামের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের তাপমাত্রা থাকে এবং এই তাপমাত্রার কারণে যেগুলো আমরা পেয়ে থাকি সেগুলোকেই আলাদা আলাদা ভাবে বা তাদের ধর্ম অনুযায়ী বিভিন্ন অংশ থেকে সংগ্রহ করা হয়ে থাকে। আর এই বিভিন্ন অংশ থেকে সংগ্রহ করা পদার্থ গুলি আলাদা আলাদা নামে হয়ে থাকে।

পেট্রোলিয়ামের বিভিন্ন হাইড্রোকার্বন মিশ্রণ এদের স্ফুটনাঙ্ক ও বিভিন্ন তাই আমরা অপরিশোধিত তেল ব্যবহারের উপযুক্ত হয় না তাই একে বিভিন্নভাবে পাতন প্রক্রিয়ায় শোধন করতে হয় এই পাতন প্রক্রিয়ায় শোধন করার সময় পেট্রোল গ্যাস পেট্রোলিয়াম নাপথা যা আলাদা আলাদা জায়গা থেকে আমরা ধরে নিই বা সংগ্রহ করি। এই সংগ্রহ করার প্রক্রিয়ার একটি উপাদান হল ডিজেল। ডিজেল হল এই কলামের একটি অংশের থেকে সংগ্রহ করা জ্বালানি। কলামের ১৭১ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ২৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত যে অংশ থেকে বের হয় এটির নামই ডিজেল। ডিজেল যে হাইড্রোকার্বন সমূহ থাকে তাদের অন্যতে কার্বনের সংখ্যা ১৭ থেকে ২০ পর্যন্ত। এবং এটি যানবাহনের জ্বালানি পিচ্ছিল কারক পদার্থ এবং দ্রাবক হিসাবে আমরা ব্যবহার করে থাকি। আর যে সকল ইঞ্জিন ডিজেল দ্বারা চালনা করা হয় সে সকল ইঞ্জিনকেই আমরা ডিজেল ইঞ্জিন হিসেবে চিনে থাকি।

এই ডিজেল ইঞ্জিনের মধ্যে আছে স্যালো মেশিন বিভিন্ন যানবাহন অর্থাৎ বাস স্ট্যান্ড ইত্যাদি রেলগাড়িও ডিজেল দিয়ে চলে। অপরদিকে আবার যে সকল ইঞ্জিন পেট্রোল চালিত বা পেট্রোল দিয়ে চালনা করা হয় তাকে পেট্রোল ইঞ্জিন বলা হয়ে থাকে। যেমন বিভিন্ন মাইক্রো গাড়ি মোটরসাইকেল ইত্যাদি উন্নত পরিমাণের পেট্রোল ইঞ্জিন দিয়ে বা পেট্রোল দিয়ে চলে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *