খ্রিস্টাব্দ ও সালের মধ্যে পার্থক্য

খ্রিষ্টাব্দ শব্দের অর্থ যিশুখ্রিস্টের জন্ম থেকে যে বছরের গণনা করা হয় তাকে খ্রিস্টাব্দ বলা হয়ে থাকে। এছাড়াও খ্রিষ্টাব্দ কে আমরা অনেকেই ইংরেজির সাল বলে জেনে থাকি। অর্থাৎ ইংরেজি বছর গণনার ক্ষেত্রে খ্রিস্টাব্দ ব্যবহার করা হয়। পূর্বে যীশু খ্রীষ্টের জন্মের আগে খিষ্টপূর্বাব্দ বর্ষপঞ্জিটি ব্যবহার করা হতো। পরবর্তীতে যীশু খ্রীষ্টের জন্মের সাল থেকে খ্রিস্টাব্দ বছর গণনা করা হয়ে থাকে। এই খ্রিস্টাব্দটি আন্তর্জাতিক হিসেবে ব্যবহার করা হয়। বর্ষপঞ্জির একটি আন্তর্জাতিক বছর বা ইংরেজিতে Year গণনা পদ্ধতি। তাই আমরা সকলেই নিজের জন্ম তারিখ বা অন্য যে কোন জন্ম তারিখে সাল কথাটা উল্লেখ করে থাকি। ইংরেজিতে সাল যার বাংলায় লিখা হয় সন। অর্থাৎ বঙ্গাব্দ গণনার কারণে বা বঙ্গাব্দ বছর হিসাব করার সময় শন উল্লেখ করা হয়।

অথবা বলা হয় ১৪০০ বঙ্গাব্দ। অর্থাৎ বাংলা বছর গণনার জন্য বা বাংলা বছর উল্লেখ করার ক্ষেত্রে আমরা যেমন ভাবে বঙ্গাব্দ কথাটি ওখানে উল্লেখ থাকে তেমনিভাবে ইংরেজি বছর উল্লেখ করার ক্ষেত্রে আমাদেরকে অবশ্যই খ্রিস্টাব্দ উল্লেখ করতে হবে। আমরা না জেনে না শুনে অর্থাৎ জন্ম তারিখ উল্লেখ করার সময় বলে থাকি সাল। সাল এবং খ্রিস্টাব্দ সমার্থক শব্দে ব্যবহৃত হলেও এটি আসলে সমার্থক শব্দ হয় না। বাংলা তারিখ লেখার পর আমরা যদি সাল লিখে থাকি তাহলে সেটি অবশ্য বোঝা যাবে না। বাংলা তারিখ বোঝানোর জন্য অবশ্যই আমাদের সন কিংবা বঙ্গাব্দ কথাটি লিখলে বোঝা যাবে নতুবা নয়। তেমনি ভাবে আমরা যদি ইংরেজিতে বছর উল্লেখ করার পর খ্রিস্টাব্দ না লিখে সরান লিখি সেটাও ভুল হবে। যদিও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে আমাদের ইংরেজি তারিখ ব্যবহৃত হয় এবং এই ইংরেজি তারিখ লিখার পর আমরা বলে থাকি সাল।

তাই আমরা এ কথা বলতে পারি যে সাল শব্দের ইংরেজি প্রতিশব্দ বা আভিধানিক অর্থ হচ্ছে Year এবং বাংলা সনের বা বঙ্গাব্দের প্রতিশব্দ হলো সন। তাই ইংরেজিতে ইয়ার এবং বাংলাতে বছর। তবে যীশু খ্রীষ্টের জন্মের আগে সেখানে উল্লেখ করা হতো খ্রিস্টপূর্বাব্দ। অর্থাৎ কথাটি দ্বারা যিশুখ্রিস্টের জন্মের এত বছর পূর্বে এরকম বলা হয়ে থাকে। পৃথিবীতে অনেক ধরনের বর্ষপঞ্জি হয়ে থাকে। বর্ষপঞ্জি গুলি একেক দেশের একেক নিয়মে হয়ে থাকে। কোথাও কোথাও চন্দ্র বাসর হিসাব করা হয় আবার কোথাও কোথাও সৌর বছর হিসাব করা হয়। তাই যে বছরটি বা যে তারিখটি আপনি বর্ষপঞ্জির তারিখ অনুযায়ী লিখবেন এবং সেই বর্ষপঞ্জির নাম আমাদের দিয়ে দিতে হবে। ইংরেজি বছর লিখলে খ্রিষ্টাব্দ অথবা খ্রিস্টপূর্বাব্দ লিখতে হয়। বাংলা বছর লিখলে অবশ্যই বঙ্গাব্দ আরবি বছর লিখলেন হিজরী উল্লেখ করতে হয়।

এভাবে আমরা বছর দিন তারিখ মাস ইত্যাদি লিখে থাকলেও সেটি কোন বছরের বা কোন বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী দিন তারিখ মাস বছর উল্লেখ করা হয়েছে সেটি আমাদের অবশ্যই পাশে উল্লেখ করতে হবে। তবেই সেটি ঠিকমতো উল্লেখ করা হবে। যেমন একটি কথা বা উদাহরণ দিয়ে আমরা বোঝাতে পারি। সেটি হলো রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৯১৩ খ্রিস্টাব্দে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হন। এই কথাটি দ্বারা আমরা অবশ্যই বুঝতে পারলাম যে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ইংরেজি বা খ্রিস্টাব্দ 1913 সালে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন। এই তারিখটিই যদি আমরা আবার বঙ্গাব্দ তারিখে উল্লেখ করি তাহলে অবশ্যই বঙ্গাব্দ কথাটি পাশে লিখতে হবে। তখন সেখান থেকে আমরা খ্রিষ্টাব্দ সালটু বের করে নিতে পারব। তাই আমরা যে বর্ষপঞ্জি ব্যবহার করব সেই বর্ষপঞ্জির নাম আমাদের উল্লেখ করতে হয়। আমাদের এই পোস্টে আমরা এতক্ষণে সাল এবং খ্রিস্টাব্দ দুটি বিষয়েই বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

এখান থেকে অবশ্যই আপনারা সাল খ্রিস্টাব্দ সন ইত্যাদির পার্থক্য বুঝে নিলেন। তাহলে এখন আমরা অবশ্যই যে বর্ষপঞ্জিটি লিখব সে বর্ষপঞ্জের নাম লিখে দিলে আর সেটি বুঝতে কারোই ভুল হবে না। শুধু সাল লিখে দিলে হয় না। সেই সালটি ইংরেজি বাংলা হিজরী বা এরাবিক ইত্যাদি অনেক কিছু বোঝাতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *