বিভব পার্থক্য কাকে বলে

আমরা জানি যে বিদ্যুৎ প্রবাহ হল মূলত ইলেকট্রনের প্রবাহ এবং এই প্রবাহ দুই ধরনের একটি ডিসি এবং অপরটি এসি বিদ্যুৎ প্রবাহ। তবে কোন বর্তনীতে তড়িৎ প্রবাহের জন্য দরকার এর দুই প্রান্তের বিভব পার্থক্য। অর্থাৎ দুইটি ভিন্ন বিভবের ধাতবস্তুকে কোন পরিবাহী তার দ্বারা যদি যুক্ত করা হয় তখন তাদের তারের মধ্যে দিয়ে বিদ্যুৎ প্রবাহিত হতে পারে বা বিদ্যুৎ চলাচল করতে পারে। আধুনিক ইলেকট্রন তত্ত্ব থেকে আমরা জানি যে প্রত্যেক ধাতব পদার্থের কিছু মুক্ত ইলেকট্রন থাকে যারা ওই পদার্থের মধ্য দিয়ে মুক্তভাবে ঘুরে বেড়াতে পারে। এবং এই মুক্ত ইলেকট্রন গুলি বিদ্যুৎ মূলত ভাবে এ প্রান্ত থেকে এ প্রান্তে বয়ে নিয়ে বেড়ায়। যখন দুটি ভিন্ন বিভাগের ধাতব বস্তুকে তার দ্বারা সংযুক্ত করা হয় তখন নিম্নবিভাবসম্পন্ন ধাতব বস্তু থেকে ঋণাত্মক আধানযুক্ত ইলেকট্রন উচ্চবিভক সম্পন্ন ধাতব বস্তুর দিকে প্রবাহিত হতে থাকে। এবং এই বিদ্যুৎ প্রবাহ ততক্ষণ পর্যন্ত চলতে থাকে যতক্ষণ পর্যন্ত ধাতব বস্তুর মধ্যে বিভব পার্থক্য বর্তমান থাকে।

তাই আমরা সবাই ইলেকট্রিক লাইনের গায়ে নানা রকম সতর্কবাণী দেখে থাকি যেমন বিপদজনক দশ হাজার ভোল্টলে আমরা একথা জানি যে ইলেকট্রনিক শখ বলে একটা বিষয় আছে এবং সেটি খুব বিপদজনক হয় অসতর্ক মানুষ ইলেকট্রিক সক্ষে মারা যায় এরকম উদাহরণ আমাদের আশেপাশে অহরহ রয়েছে। আসলে কোথাও যদি বিভাগ পার্থক্য বা পটেনশিয়াল বেশি থাকে এবং সেটা যদি তুমি স্পর্শ করো তাহলে তোমার শরীরের পটেনশিয়াল যেহেতু কম সেজন্য বেশি বিপদের জায়গা থেকে চার্জ তোমার শরীরে চলে আসবে। আর চার্জের সেই প্রবাহ কতটুকু তার ওপর নির্ভর করে তোমার ভেতরের অনেক কিছু হতে পারে। তাহলে আমরা নিশ্চয়ই বুঝতে পারছি যে চার্জ প্রবাহিত হয় বিভব পার্থক্যের জন্যই। বিভাবের মানের জন্য বিদ্যুৎ প্রবাহিত হয় না। সেই কারণে একটা কাক যখন হাইফোল্টেজ ইলেকট্রিক তারের ওপর বসে সে ইলেকট্রিক শক খায় না কারণ তাদের বিভব এবং তার নিজের বিভব সমান এদের মধ্যে কোন পার্থক্য না থাকার কারণে কাকের ইলেকট্রিক শক লাগেনা।

তাই শুধু তাই নয় দশ হাজার কিংবা ২০ হাজার ভোল্টের প্রচন্ড উচ্চ ভোল্টেজে কর্মীরা হেলিকপ্টার দিয়ে খালি হাতে কাজ করে। তার কোন ইলেকট্রিক শক খায় না। এর কারণ হলো শূন্যে থাকার কারণে তারা যখন হাইভোল্টেজ তার স্পর্শ করে তাদের শরীরের ভোল্টেজ তারের সমান হয়ে যায় এই কারণে সেই সময় তারা হাইভোল্টেজ তারে কাজ করলেও তাদের শক লাগেনা। অর্থাৎ তাদের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই তাই সাজ প্রবাহিত হয় না, ইলেকট্রিক সহ খাবে না তার মনে হচ্ছে ভোল্টেদের পার্থক্যটা শুধু গুরুত্বপূর্ণ ভোল্টেজের মান নয় এটা আমাদের অবশ্যই জেনে রাখা প্রয়োজন।

তারপরও যখন ভোল্টেজের মান মাপতে হয় তখন তার জন্য একটা নির্দিষ্ট ভোল্টেজ থাকলে অবশ্যই ভালো হয় তাপমাত্রার বেলায় একটা পরম শূন্য তাপমাত্রা ছিল অনেকটা সেরকম যদি হয় তাহলে আমাদের জীবনে আমরা পৃথিবীকে শূন্য বিভব ধরে নিতে পারি। মূলত কোনো পরিবাহীর যেকোনো প্রস্তর সেদের মধ্যে দিয়ে একক সময়ের যে পরিমাণ বিদ্যুৎ আধান প্রবাহিত হয় তাই তড়িৎ প্রবাহ বলা হয়। বিদ্যুৎ প্রবাহে তৈরি হয় ইলেকট্রন প্রবাহের জন্য কোন পরিবাহীর দুই প্রান্তে যদি বিভব পার্থক্য থাকে এই প্রবাহ শুরু হয় তাহলে এই ক্ষেত্রে ইলেকট্রনের নিম্নবিভাগ থেকে উচ্চ বিভাগের দিকে প্রবাহিত হয়।

ইলেকট্রন যখন প্রবাহিত হয় বা ইলেকট্রনস যখন স্রোত হয় পরিবাহীর মধ্য দিয়ে চলার সময় তখন পরিবাহীর অভ্যন্তরস্থ অনুকরণের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। তখন কিছু পরিমাণ বিদ্যুতের অপচয় হয় বা বাধা প্রাপ্ত হয় এই বাধা প্রাপ্ত কে বিদ্যুতের আবার রোধ বলা হয়ে থাকে।
বিপদ পার্থক্য সম্পর্কে বিভিন্নভাবে বিস্তারিত তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করলাম তাহলে এখন দেখা যাক যে বিভব পার্থক্য কাকে বলে?
বিভব পার্থক্য: প্রতি একক আধান কে তড়িৎপক্ষের এক বিন্দু থেকে অন্য বিন্দুতে স্থানান্তর করতে সম্পন্ন কাজের পরিমাপ হল ওই বিন্দুর তড়িৎ বিভব পার্থক্য।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *